এক সাঙ্গাকারাতেই হারল ভারত

sangakaraএশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষেই শ্রীলঙ্কার হয়ে স্পর্শ করেছিলেন ১২ হাজার রানের চূড়া। সে ম্যাচে করেছিলেন ৬৭। আর বাংলাদেশের বিপক্ষে মাত্রই কদিন আগের টেস্টে কি ওয়ানডেতে তাঁর ধ্রুপদি ইনিংসগুলোর স্মৃতি তো এখনো সজীব। কুমার সাঙ্গাকারার মহাকাব্যিক ইনিংসগুলো পুরাণ থেকে উঠে আসা নায়কদের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। আজও আরেকবার দেখা মিলল আরেকটি বীরোচিত ধ্রুপদি ইনিংস। বললে অত্যুক্তি হবে না, এক সাঙ্গাকারাই দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করে আজ হারিয়ে দিলেন ভারতকে।

তাহলে অজন্তা মেন্ডিসের ৪ উইকেট, কুশল পেরেরার ৬৪ রান? ভারতের বিপক্ষে চার বল বাকি থাকতে শ্রীলঙ্কার ২ উইকেটের জয় পেতে ওগুলো সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে মাত্র, ম্যাচ-নির্ধারক নয়।

২৬৫ রানে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লাহিরু থিরিমান্নে ও কুশল পেরেরার উদ্বোধনী জুটি দারুণ এক শুরু এনে দিয়েছিল। এর পরও হঠাত্ খেই হারিয়ে ফেলল শ্রীলঙ্কা। যেন শুরু হলো উইকেট পতনের মিছিল। উদ্বোধনী জুটিকে ফেরালেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। ৩২তম ওভারে পর পর দুই বলে জয়াবর্ধনে আর চান্ডিমালকে ফেরালেন রবীন্দ্র জাদেজা। দুই রবির যৌথ আক্রমণের সঙ্গে মোহাম্মদ শামিও যোগ দিলে বিনা উইকেটে ৮০ থেকে শ্রীলঙ্কা হয়ে গেল ৬ উইকেটে ১৮৩। ১০৩ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসল শ্রীলঙ্কা। ম্যাচ থেকেও এক রকম ছিটকে পড়ল। তখনো জয় থেকে ৮২ রান দূরত্বে লঙ্কানরা। যেভাবে উইকেট পড়ছিল, মনে হচ্ছিল এ যেন দুর্গমগিরি আর কান্তার মরু পার হওয়ার বাধা শ্রীলঙ্কার সামনে। সে সময়ই শ্রীলঙ্কার ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন সাঙ্গা, আর আসে শিশির।

শিশিরের ভূমিকা ছিল, কিন্তু তাই বলে সাঙ্গাকারার কৃতিত্ব এতটুকু ম্লান হচ্ছে না। রান তাড়া করার স্নায়ুবিক উত্তেজনা যেন চুইংগামের সঙ্গে চিবিয়ে ফেলেছেন এই বাঁ-হাতি। একপ্রান্তে দাঁড়িয়ে সতীর্থদের যাওয়া-আসা দেখলেও ঠান্ডা মাথায় ভারতীয় বোলারদের ‘খুন’ করার ছক কষছিলেন। শ্রীলঙ্কার জুটিগুলোর দিকে তাকালেই সেটা স্পষ্ট। তিনে ব্যাট করতে নেমে অন্যপ্রান্ত থেকে ছয় সঙ্গীকে আউট হতে দেখেছেন। এদের কারও সঙ্গে কিন্তু অর্ধশত রানের জুটিও হয়নি তাঁর। তবে সপ্তম আর অষ্টম উইকেট জুটিতে চতুরঙ্গা ডি সিলভা আর থিসারা পেরেরাকে নিয়ে এনে দিলেন মহাগুরুত্বপূর্ণ ৭৫। এর মধ্যে সাঙ্গারই অবদান ৫৬।

অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০৩ রান করে আউট হলেন যখন, শ্রীলঙ্কার দরকার তখন ৯ বলে ৭। হাতে মাত্র দুই উইকেট। এমন উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে ভাগ্যের ছোঁয়ায় মেন্ডিসের ব্যাটের কোণায় লেগে বল চলে গেল সীমানার বাইরে।

সত্যিই আজ শ্রীলঙ্কা ভাগ্যের ছোঁয়া পেয়েছে। নইলে ভারতীয়রা আজ চারটি ক্যাচ ফেলবেন কেন। ম্যাচের শেষ প্রান্তে এসে ক্যাচ ফেলে দিনটাকে দুর্ভাগ্যের চূড়ান্তে নিয়ে গেছেন ব্যাট হাতে ৯৪ রানে আউট হওয়া শিখর ধাওয়ান। শ্রীলঙ্কা শিশিরের সহায়তাও পেয়েছে খানিকটা। কিন্তু আসল ত্রাণকর্তা সেই সাঙ্গাকারা, নির্ভীক, আত্মপ্রত্যয়ী, আস্থার মূর্ত প্রতীক সাঙ্গাকারাই!

ক্লাসিফাইড বিজ্ঞাপন
addd
addd
addd
addd

Perfect Facebook Like Box Sidebar